ঢাকা কলেজে ছুটে আসা তৃষ্ণার্ত বানর
প্রকাশিত : ১৩:৪৩, ১৭ মার্চ ২০২০
এটা দেখে কোন সিনেমার শুটিং বা ইডিটিং করা ছবি ভাবার কারণ নেই। এভাবেই দুটি তৃষ্ণার্ত বানর নিজের তৃষ্ণা মেটাতে পানি পান করছিল। এটি ঢাকা কলেজের একটি দৃশ্য।
লাফা-লাফি আর দুষ্টুমিতে বানরটি যখন ক্লান্ত আর খুব তৃষ্ণার্ত। তখন তার তৃষ্ণা মিটাতে বিশুদ্ধ পানি পান করতে ছুটে চলে আসে ঢাকা কলেজের মূল ভবনের ২য় তলায়। বানর দুটি পানির ফিল্টার থেকে ইচ্ছে মতো পানি পান করে নিজের তৃষ্ণা মিটিয়ে নিচ্ছে। যেন তার নিজ বাসস্থান।
মনের আনন্দে পানি পান করে যাচ্ছে। ঠিক তখনই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী হাসান শাহরিয়ার শিমুলের মোবাইলের ক্যামেরায় বন্ধি হয় বানরের পানি পান করার এ দৃশ্যটি।
যদিও একটি বানর পানির ফিল্টার থেকে পানি পান করছিল, অন্যটি পানির লাইনে ঝুলে পাইপ থেকে তার তৃষ্ণা মেটাচ্ছাছিল। এই অদ্ভুত ভঙ্গিতে পানি পান করার দৃশ্য সবাইকে মুগ্ধ করেছে। তাইতো পাশ দিয়ে যাওয়া প্রতিটি মানুষ দাঁড়িয়ে এ দৃশ্যে চোখ না ফিরিয়ে পারছিল না।
কেউ দাঁড়িয়ে মজা নিচ্ছিল আর কেহ মোবাইল দিয়ে ছবি ও ভিডিও করছিল। বানর দুটির অদ্ভুত ভঙ্গিতে পানি পান করার দৃশ্য সত্যি মুগ্ধ করেছিল সবাইকে।
শুধু তাই নয়, ঢাকা কলেজে প্রায়ই দেখা মিলে এসব বানরের। কখনো একা আবার কখনো দল বেধে ঢাকা কলেজের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়ায় তারা। বানরের এ সমস্ত দৃশ্যে ঢাকা কলেজের সৌন্দর্যকে আরও বৃদ্ধি করছে। বানরের দৃশ্য দেখতে ভীর জমায় শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বহিরাগতরাও।
ঢাকা কলেজের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী ও বহিরাগত মানুষ তাদের প্রায়ই খাবার দিয়ে থাকে। কখনো কখনো খাবার খেতে হাতের নাগালে চলে আসে বানরের দল। এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে বেড়ানো হল বানরদের কাজ। তাইতো পুকুর পাড়, কেন্দ্রিয় মাঠ, ক্যান্টিন ও শহীদ মিনারের আশে পাশে বেশি দেখা মিলে বানরের দলকে।
ঢাকা কলেজের ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের শিক্ষার্থী ইমাম হোসাইন বলেন, ‘আমি ঢাকা কলেজের উত্তর গেইট দিয়ে প্রবেশ করছিলাম। তখন দেখি কিছু মানুষ বানরদের খাবার খাওয়াচ্ছে। বিষয়টি দেখে আমার খুবই ভাল লাগে। তখন আমিও কলা আর কিছু খাবার কিনে তাদের খাওয়াচ্ছিলাম। সবচেয়ে ভাল লাগলো, বানরটি যখন তার নিজ হাত দিয়ে আমার হাত থেকে কলাটি নিয়েছে। অন্য আরেকদিন দেখি ঢাকা কলেজের বিজয় চত্বরের পাশে একটি বানর ও কুকুর দুষ্টুমি করছে।’
বানর বুদ্ধিমান ও সামাজিক জন্তু, অধিকাংশ প্রজাতিই গাছে বাস করে। নিরামিষভোজী হলেও এদের বাসস্থান ও খাদ্যে পর্যাপ্ত বৈচিত্র্য আছে। বাংলাদেশে ১০ প্রজাতির প্রাইমেটের মধ্যে রয়েছে ৫ প্রজাতির বানর। পৃথিবীতে বর্তমানে বিদ্যমান ১৯ প্রজাতির বানরের মধ্যে এক প্রজাতি ছাড়া অন্য সবগুলি ছড়িয়ে আছে এশিয়ার আফগানিস্তান থেকে জাপান, ফিলিপাইন ও বোর্নিও পর্যন্ত।
সাধারণত বড় আকারের পুরুষ বানর ৬০ সেমি লম্বা হতে পারে। এদের ২৫-৬০ সদস্যের একেকটি দল নানা আবাসস্থলে বন ও বিভিন্ন উচ্চতার পাথুরে পাহাড়ে থাকে। সর্বভুক এই জন্তুগুলি প্রায়শ ফসলের ক্ষেত ও বাগানে হামলা চালায়। মানুষের মতো এদের রক্তেও আরএইচ ফ্যাক্টর থাকায় এই বানর চিকিৎসা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
এআই/
আরও পড়ুন